বৃহঃস্পতিবার, ৮ই মে ২০২৫, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩২ | ই-পেপার
ব্রেকিং নিউজ:
  • সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আগ্রহী হলে আপনার সিভি ই-মেইল করতে পারেন। ই-মেইল daajkaal@gmail.com
সংবাদ শিরোনাম:
  • চীনের তৈরি HQ9 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম প্রতিরক্ষা কাজে কতটা সক্ষম
  • প্রসেনজিতের মেয়ে প্রেম করছেন, ফুফু বললেন ‘খুব মিষ্টি’
  • ভারতের ২০টিরও বেশি বিমানবন্দর বন্ধ
  • বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস আজ
  • সরকার কেন প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না
  • সঙ্কটের সময় সর্বদলীয় বৈঠকে মোদি আসছে বড় সিদ্ধান্ত
  • পাকিস্তানি অভিনেত্রীকে দেখতে ভিপিএন কিনছে ভারতীয়রা
  • আ.লীগকে সুবিধা দেওয়ায় ইউনূস সরকারকে একহাত নিলেন হাসনাত
  • গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতায় আরও ৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত
  • বায়ুদূষণে শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান পঞ্চম

সড়ক প্রশস্থ করণে ন্যায্যমূল্য থেকে মালিকদের বঞ্চিত করার পাঁয়তারা  

তছলিমুর রহমান, লক্ষ্মীপুর 

প্রকাশিত:
১৮ জুন ২০২৩, ১৭:২৭

লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের উত্তর তেমুহনী থেকে দক্ষিণ তেমুহনী পর্যন্ত শহর সংযোগ সড়ক প্রশস্থ করণে মার্কেট ভাঙনের নোটিশ দিয়েছে প্রশাসন। এ সড়কটি পুরোই বাণিজ্যিক এলাকা। সেই হিসেবে দোকানঘর মালিকরা যুগ যুগ ধরে খাজনাও পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু জেলা প্রশাসন ১৯৬০ সালের খতিয়ান বিবেচনা করে নাল ও বাগান হিসেবে জমির দর নির্ধারণ করেছে। এতে জমির ন্যায্য মূল্য থেকে মালিকদের বঞ্চিত করার পাঁয়তারা চলছে। এনিয়ে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে দোকানঘর মালিক ও ব্যবসায়ীদের মাঝে। 
এদিকে গত ৭ জুন জেলা প্রশাসন কর্তৃক সর্বশেষ নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। কিন্তু এ নোটিশ ১২ জুন দোকানঘর মালিক ও ব্যবসায়ীদেরকে দেওয়া হয়। এতে আগামি ২৪ জুন নিজ দায়িত্বে দোকানঘর ভেঙে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে জানা গেছে। ১২ জুন শামছুল করিম ও তার ভাই সাহাবুদ্দিন সাবু, নাজমুল করিম, আবুল কালাম আজাদ, আজিজুল করিম, রেজাউল করিম, বজলুল করিমকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩টি নোটিশ (স্মারক নং- ৬৮৭/১ (৮), ৬৮৮ (১) (৮) ও ৭০১/১ (৮)) দেওয়া হয়। তাঁরা বাঞ্চানগর এলাকার মৃত হারিছ মিয়ার ছেলে ও জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র উত্তর তেমুহনী হারিছ মার্কেটের ওয়ারিশ। নোটিশে প্রায় ৭ শতাংশ জমির মূল্য ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ৭০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া রেজাউল করিম লিটনের মালিকানাধীন চান্দিনা ভিটার ০.৬৫ শতাংশ জমির মূল্য ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ ধরা হয়েছে প্রায় ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। 
সাহাবুদ্দিন সাবুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় ৩০ বছর ধরে বাণিজ্যিক (চান্দিনা ভিটা) এলাকা হিসেবে হারিছ মার্কেটের খাজনা পরিশোধ করা হয়। এখন নাল জমি ও বাগান দেখিয়ে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সর্বশেষ ২০২০ সালেও তারা বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে জমির খাজনা পরিশোধ করেছেন। জমির মৌজা অনুযায়ী প্রতি শতক জমির মূল্য প্রায় ৫৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে প্রতি শতক জমির জন্য তারা ৩ গুণ টাকা পাবেন। এতে ন্যায্যমূল্য পেলেই তারা নিজেরাই জমি থেকে স্থাপনা সরিয়ে ফেলবেন।  
জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকার হারিছ মার্কেটের ওয়ারিশ সাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে আমরা খাজনা পরিশোধ করে আসছি। কিন্তু জেলা প্রশাসক ১৯৬০ সালের খতিয়ান বিবেচনায় এনে আমাদের জমি বাগান দেখিয়ে মূল্য নির্ধারণ করেছেন। সরকার জমির ন্যায্যমূল্য দিয়েই বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসক অদৃশ্য বলয়ে আমাদেরকে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত করার পাঁয়তারা করছেন। রাস্তা প্রশস্থ করণ জরুরী। কিন্তু আমাদেরকে ন্যায্যমূল্য না দিলে আমরা দোকানঘর ভাঙতে রাজি নয়। 
লক্ষ্মীপুর বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, সড়ক প্রশস্থ করণে দোকানঘর ভাঙার জন্য অন্তত একমাস সময় দিতে হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন ১২ জুন নোটিশ দিয়েছেন। ২৪ জুন থেকে দোকান সরিয়ে নেওয়ার জন্য এতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ঈদের পরে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আমরা বণিক সমিতি পক্ষ থেকে সময় চাচ্ছি। এতো দ্রুত সময়ে দোকানপাট ভাঙা বা সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়। এছাড়া জমির মালিকদেরকেও ন্যায্যমূল্য দিতে অপারগ জেলা প্রশাসন। 
লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি জেলা প্রশাসক বলতে পারেন। অধিগ্রহণের বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারছি না। আমাদেরকে জমি বুঝিয়ে দিলেই আমরা কাজ শুরু করবো। পুরো প্রকল্পের জন্য আমাদেরকে ৩৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। 
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানা যায়, ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি লক্ষ্মীপুর শহর সংযোগ সড়ক ও লক্ষ্মীপুর-চরআলেকজান্ডার-সোনাপুর-মাইজদী সড়ক প্রশস্থ করণ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করা হয়। যোগাযোগব্যবস্থা আর ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুর-চরআলেকজান্ডার-সোনাপুর-মাইজদী সড়ক প্রশস্থ করণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া শহর সংযোগ সড়কে জমি অধিগ্রহণ কাজ প্রক্রিয়াধীন। জমি বুঝে পেলেই কাজ শুরু করবে সড়ক বিভাগ। প্রায় ৪ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্থ করণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণসহ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৩৬ কোটি টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এ কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে।

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর